আমের ব্যাপক ফলনে খুশি চাষিরা বান্দরবানে,পরিবেশ অনুকূলে থাকায় বান্দরবানে এ মৌসুমে আমের ব্যাপক ফলন হয়েছে। ফলে আমচাষিদের মনে বইছে খুশির জোয়ার। তবে যেভাবে চোখে পড়ার মতো গাছে মুকুল এসেছিল সেভাবে আমের গুটি ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। এছাড়া অনাবৃষ্টির কারণে গুটি হওয়ার পরও ঝরে পড়েছে অনেক আম।
আমের ব্যাপক ফলনে খুশি চাষিরা বান্দরবানে
বান্দরবান সদর উপজেলার ডলুপাড়া এলাকার আম চাষি জানান, তিন বছর আগে দুই একর জমিতে আমের আবাদ করেছেন। এবারই প্রথমবারের মতো তার আমগাছগুলোতে ফলন এসেছে। নতুন বাগানে ফলন আসায় অত্যন্ত খুশি তিনি। তার অম্রপালি আমের বাগান হতে প্রায় ৮০ মন আম পাওয়ার আশা করছেন।
বাঘমারা এলাকার উসাইনু মারমা জানান, ৬৫ একর জমিতে মিশ্র ফলের আবাদ রয়েছে তার। যারমধ্যে একহাজার আম গাছে ফলন এসেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে প্রতি গাছ থেকে ৫০ কেজি করে ৫০ হাজার কেজি আম পাওয়ার প্রত্যাশা করছেন।
দেশি আম ৩০-৩৫ টাকা ও বেনেনা ম্যাংগো ১৮০-২৫০ টাকা কেজি দরে বাগান থেকেই নিয়ে যাচ্ছেন পাইকাররা। অন্যান্য রাংঙ্গোয়াই-রুপালি ও অন্যান্য প্রজাতির আমগুলো হারভেস্টিংয়ের সময় শুরু না হওয়ায় বাজার দর সম্পর্কে কিছুই বলতে পারছেন না। তিনি আরও বলেন, অনাবৃষ্টির কারণে যেভাবে মুকুল এসেছিল সে ভাবে ফলন হয় নি।
রেইচা এলাকার চাষি হারুনুর রশিদ জানান, প্রায় আড়াই একর জমিতে ১০০ এর বেশি আমগাছ রয়েছে। এপর্যন্ত বাগানের জন্য প্রায় আড়াই লাখ টাকার মত ব্যয় হয়েছে। তবে এবার আম গাছে যথেষ্ট পরিমাণে মুকুল এলেও অনাবৃষ্টি ও সেচের অভাবে সে অনুপাতে আম ধরেনই। এ মৌসুমে ৮০-৯০ মন আম বিক্রি করতে পারবেন বলে প্রত্যাশা করছেন তিনি।
বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শাহ নেওয়াজ জানান, ২০২১-২২ অর্থ বছরে ৯ হাজার ৮০৯ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়। যা থেকে এক লাখ ১১ হাজার ২০৭ মেট্রিকটন আম উৎপাদন হয়। এবছর এর আবাদ ও উৎপাদন আরও বাড়বে বলে আশা করছেন তিনি।
জেলায় শতকরা ৭৫ শতাংশ রাঙ্গোয়াই, ২০ শতাংশ অম্রপালি ও ৫ শতাংশ রুপালি, গৌরমতি, ব্যানেনা, জাম্বুরা ও সূর্যডিমসহ বিভিন্ন প্রজাতির আমের আবাদ করা হয়। গত বছরের তুলনায় এবছর ১০ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ ও এক লাখ ২০ হাজার মেট্রিকটন আমের ফলন পাওয়ার প্রত্যাশা করছেন তিনি।