বান্দরবান জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত একটি পার্বত্য জেলা, যা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বনজ সম্পদ এবং বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির জন্য পরিচিত। এই জেলার অর্থনীতি প্রধানত কৃষি, বনজ সম্পদ আহরণ এবং পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল।

বান্দরবান জেলার পেশা
বনজ সম্পদ ও কাঠ শিল্প
বান্দরবান জেলার বিস্তীর্ণ অশ্রেণীভুক্ত বনাঞ্চল মূল্যবান কাঠ ও বনজ সম্পদে পরিপূর্ণ। এখানে সেগুন, গামারী, গর্জন, শিল কড়ই, তৈলসুর ইত্যাদি মূল্যবান কাঠ উৎপাদিত হয়। বাঁশও এই অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ বনজ সম্পদ। সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদী এই বনজ সম্পদ আহরণ ও বিপণনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কৃষি ও ফসল উৎপাদন
বান্দরবানের উর্বর মাটি কৃষি উৎপাদনের জন্য উপযোগী। এখানে ধান, আদা, তামাক, আনারস, কলা, পেঁপে, কমলা, লেবু ও আলু চাষ করা হয়। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো বিন্নি চালের উৎপাদন, যা সাদা, লাল ও কালো এই তিন রকমের হয়ে থাকে। এছাড়া, জুম চাষের মাধ্যমে উৎপাদিত ভুট্টাও এই অঞ্চলের একটি সুস্বাদু ফসল।
পর্যটন শিল্প
বান্দরবানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার পর্যটকদের আকর্ষণ করে। এখানে দেশের সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গসহ সবুজ-শ্যামলিমা গিরিশ্রেণীর অপরূপ দৃশ্য রয়েছে। ভারত ও মায়ানমার সীমান্তবর্তী এই জেলায় বিভিন্ন উপজাতির বসবাস, যা পর্যটকদের জন্য একটি বিশেষ আকর্ষণ। পর্যটন শিল্পের বিকাশের ফলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটছে, তবে প্রাকৃতিক দূষণের হারও বাড়ছে।
সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য
বান্দরবান জেলার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যও উল্লেখযোগ্য। ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর নিজস্ব পোশাক, খাদ্য ও সংস্কৃতি রয়েছে। তারা বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব পালন করে, যা এই অঞ্চলের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে সমৃদ্ধ করে।
সার্বিকভাবে, বান্দরবান জেলার পেশা ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম প্রাকৃতিক সম্পদ, কৃষি ও পর্যটনের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। এই জেলার প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আরও পড়ুনঃ

২ thoughts on “বান্দরবান জেলার পেশা”