মাচয়ইংয়ে মজেছে শীতের বান্দরবান

মাচয়ইংয়ে মজেছে শীতের বান্দরবান – মারমা সম্প্রদায়ের বিভিন্ন উৎসব–পার্বণে পরিবেশিত হতো জ্যাত্। সংরক্ষণ আর চর্চার অভাবে এখন অনেকটাই হারিয়ে যেতে বসেছে এই লোকনৃত্যনাট্যের ধারা। পুরোনো এই ঐতিহ্যই দর্শকের সামনে তুলে ধরার উদ্যোগ নিয়েছিল বান্দরবান শিল্পকলা একাডেমি। বান্দরবান জেলা শহরের কাছে থোয়াইঙ্গ্যপাড়ায় গত শনিবার রাতভর পরিবেশিত হয় জ্যাত্ ধারার লোকনাট্য ‘মাচয়ইং’। নাচে–গানে, সুর–তাল–লয়ে তুলে ধরা হয় মারমাদের আদি ঐতিহ্য। শীতের রাতের কনকনে হাওয়া উপেক্ষা করে মঞ্চ প্রাঙ্গণে ভিড় করেন হাজারো দর্শক-শ্রোতা।

 

মাচয়ইংয়ে মজেছে শীতের বান্দরবান

বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের (কেএসআই) সহযোগিতায় আয়োজিত এ আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।

বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ, সেনাবাহিনীর বান্দরবান রিজিয়ন কমান্ডার ও ৬৯ পদাতিক ব্রিগেডের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদি হাসান, জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন, পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কাওছার, কেএসআই পরিচালক নুক্রাচিং মারমা, শিল্পকলার পরিচালক শামীম আকতার প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থানজামা লুসাই।

জেলা শহর থেকে বালাঘাটা হয়ে তিন কিলোমিটার দূরে থোয়াইঙ্গ্যপাড়ায় শনিবার বিকেল থেকেই লোকজন আসতে থাকেন। মারমা ছাড়া অন্য ভাষাভাষীর মানুষও এসেছেন। যত রাত বেড়েছে, তত ভিড় বেড়েছে। বাদক দলের বাজনার তালে, শিল্পীদের গানে ও নাচে পরিবেশনা চলে ভোর অবধি। তাল, গান ও নৃত্যের এক লয়ে অভিনয় হয় বলেই জ্যাত্‌কে বলা হয় গীতিনৃত্যনাট্য, প্রথম আলোকে জানিয়েছেন কেএসআইয়ের সাবেক পরিচালক মং নু চিং মারমা।

প্রধান অতিথি উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, প্রতিটি জাতিগোষ্ঠীর নিজেদের স্বতন্ত্র সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে হবে, বিকশিত করতে হবে। শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ জানালেন, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ভাষা, সংস্কৃতি রক্ষা ও উন্নয়নে শিল্পকলা একাডেমির ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সেল কাজ করছে। তারই অংশ হিসেবে মারমা লোকনাট্য মাচয়ইং মঞ্চায়ন।

google news
গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

‘মাচয়ইং’ লোকনৃত্যনাট্য পরিবেশন করেছে রুমা থানাপাড়া জ্যাত্ দল। এ নাটকের প্রধান চরিত্র রাজবধূ মাচয়ইং। মাচয়ইংয়ের জীবনের সঙ্গে সেই সময়কার মারমা সমাজের সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, ঘাত-প্রতিঘাত ও টানাপোড়েন দেখানো হয়েছে। নাটকটি মারমা সমাজের বাইরেও সবার কাছে জনপ্রিয়। নাটকে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন জউপ্রু মারমা।

তাঁর ভাষ্যে, ‘অসাধারণ চরিত্র মাচয়ইং। জ্যাত্‌ নাট্যধারা ও মারমা সমাজের শিকড়ের সংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার দায় থেকেই মাচয়ইং চরিত্রে অভিনয়।’

Leave a Comment