বান্দরবানে এবারও হচ্ছে না রাজপূণ্যাহ

হচ্ছে না রাজপূণ্যাহ – বান্দরবান পার্বত্য জেলার ঐতিহ্যবাহী রাজকর আদায়ের উৎসব রাজপূণ্যাহ মেলা শত বছরের পথ ধরে প্রতিবছর আয়োজন করা হলেও এবছরও “১৪৭তম রাজপূণ্যাহ”র আয়োজন হবে না বলে জানিয়েছে রাজ পরিবার।

 

বান্দরবানে এবারও হচ্ছে না রাজপূণ্যাহ

সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) বান্দরবানের বোমাং রাজা উ চ প্রু চৌধুরীর সহকারী অং ঝাই খ্যায়াং ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, দেশের বর্তমান অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে মেলার আয়োজন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বোমাং রাজা।

বোমাং রাজ পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বান্দরবান শহরের স্থানীয় রাজার মাঠে প্রতিবছর ডিসেম্বরের শেষে বা জানুয়ারির প্রথম দিকে তিন দিনব্যাপি রাজমেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে। কিন্তু অস্থিতিশীল আইনশৃংখলা পরিস্থিতির কারণে এবারও রাজপূণ্যাহ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বোমাং রাজা।

প্রতিবছর মেলাকে ঘিরে জেলার ১১টি আদিবাসী সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যমণ্ডিত মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এ সময় এলাকা পাহাড়ি-বাঙালিদের মিলন মেলায় পরিণত হয়, পর্যটকসহ দেশি-বিদেশি লক্ষাধিক মানুষ ভিড় জমায় পর্যটন শহর বান্দরবানে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রবীণ নেতা হিসাবে বোমাং রাজার আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য তিন পার্বত্য জেলার দুর্গম এলাকা থেকে পাহাড়িরা রাজ দরবারে এসে ভিড় জমান।

বোমাং রাজ পরিবার সূত্র আরো জানায়, ব্রিটিশ শাসন আমলে পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলাকে তিনটি সার্কেলে বিভক্ত করে খাজনা আদায় করা হতো। ১৮৬৬ সাল পর্যন্ত চাকমা রাজা পার্বত্য এলাকা শাসন করতো। ১৮৬৭ সালে কর্ণফুলি নদীর দক্ষিণ অঞ্চলের মারমা অধ্যুষিত এলাকাকে বোমাং সার্কেল, ১৮৭০ সালে রামগড় ও মাইনি উপত্যকার এলাকাকে নিয়ে মং সার্কেল গঠিত হয়।

বান্দরবান শহরের বাসিন্দা শামসুল ইসলাম বলেন,“বছরের পর বছর ধরে রাজপূণ্যাহর আয়োজন না করার কারণে জেলার মানুষ তাদের ঐতিহ্যবাহী জমকালো সাংস্কৃতিক এই আয়োজন ভুলতে বসেছে, এই ঐতিহ্য সবার ধরে রাখা উচিত।”

google news
গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

আরও জানা গেছে, বর্তমানে রাঙ্গামাটিকে চাকমা সার্কেল, বান্দরবানকে বোমাং সার্কেল এবং খাগড়াছড়িকে মং সার্কেল হিসাবে গণ্য করা হয়। প্রায় ১৭৬৪ বর্গমাইল এলাকার বান্দরবানের ৯৫টি, রাঙ্গামাটির রাজস্থলি ও কাপ্তাই উপজেলার ১৪টি মৌজা নিয়ে বান্দরবান বোমাং সার্কেল। ২০০ বছরের ঐতিহ্য অনুসারে বছরে একবার এই মেলা আয়োজন করা হয় বোমাং সার্কেলের পক্ষ থেকে।

 

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment